আর্য সভ্যতার ইতিহাস।
আর্য কোনো জাতির নাম নয়। যারা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর যে কোনো একটি ভাষার কথা বলতো তারাই আর্য নামে পরিচিত ছিলো। ঐতিহাসিকদের মতে, আর্যদের আদি বাসস্থান ছিলো মধ্য এশিয়ার ককেশাস অঞ্চলে। কালক্রমে তারা সেখান থেকে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। আজ থেকে প্রায় ৪,০০০ বছর আগে তাদের একটি বংশ ইরান থেকে ভারতবর্ষে চলে আসে। ধীরে ধীরে তারা স্থানীয়দের পরাজিত করে এখানে একটি সভ্যতা গড়ে তোলে। আর্যরা প্রথম সভ্যতা গড়ে তোলে আনুমানিক ৩,৫০০ বছর আগে শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী, চন্দ্রভাগা, ঝিলান, সিন্দু ও সরস্বতী নদীর অববাহিকা অঞ্চলে। পরবর্তীতে তারা উত্তর ভারত অধিকার করে নিজেদের নামানুসারে এ অঞ্চলের নামকরণ করে আর্যাবর্ত। ধীরে ধীরে তারা মধ্য ও দক্ষিণ ভারত এমনকি বঙ্গদেশ পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলো।
সামাজিক জীবন
আর্য সমাজ ছিলো পিতৃতান্ত্রিক। তাদের পরিবার ছিলো একান্নবর্তী। পরিবারের কর্তাকে বলা হতো গৃহপতি। তাদের সমাজে নারীদের অধিকার ছিলো খুবই সীমিত। তাদের সামাজিক জীবন ছিলো বর্ণপ্রথা দ্বারা বিভক্ত। আর্যরা পেশার ভিত্তিতে যে সামাজিক শ্রেণি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলো সেটিই হলো বর্ণপ্রথা। দীর্ঘদেহী ফর্সা বর্ণের আর্যরা নিজেদেরকে স্থানীয় দ্রাবিড় ও অন্যান্য ভারতীয় জাতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করতো। আর্যরা তাদের সমাজকে ব্রাক্ষ্মন, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র- এই চারটি মূল শ্রেণিতে বিভক্ত করেছিলো। যারা অধ্যয়ন-অধ্যাপনা, যাগযষ্ম প্রভৃতি ধর্মানুষ্ঠানে বিশেষ পারদর্শী ছিলো, তারা ছিলো ব্রাক্ষ। সাহসী ও তেজস্বী যোদ্ধারা ছিলো ক্ষত্রিয়। যারা ক্রিসিকাজ, পশুপালন ও ব্যাবসায়-বাণিজ্য করতো তারা ছিলো বৈশ্য। আর যারা আর্যদের কাছে পরাজিত হয়েছিলো কিংবা বশ্যতা স্বীকার করেছিল তারা ছিলো শূদ্র। ব্রাক্ষ্মন, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের সেবা করাই ছিলো শূদ্রদের কাজ। আর্য বর্ণপ্রথায় এক বর্ণ থেকে অন্য বর্ণে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিলো না।
ধর্ম
আর্যরা বহু দেব-দেবীতে বিশ্বাসী ছিলো। তাদেরফ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেবতা ছিলেন ব্রহ্মা ( সৃষ্টির দেবতা ), শিব ( ধ্বংসের দেবতা ), এবং বিষ্ণু ( পালনের দেবতা )। আর্যদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ছিলো বেদ। আর এই কারণে ধর্মটিকে বৈদিক ধর্মও বলা হয়। পরবর্তী সময়ে এটিই হিন্দু ধর্ম নামে পরিচিত হয়েছে। বৈদিক ধর্মই আর্যদের একমাত্র ধর্ম ছিলো না। তাদের আরো দুটি ধর্ম ছিলো। সেগুলো হলো বৌদ্ধ ধর্ম ও জৈন ধর্ম।
বিনিময় প্রথা
আর্যরা মুদ্রার ব্যবহার জানতো না, বা তাদের সময় মুদ্রা আবিষ্কার হয়নি। তখন দ্রব্য বিনিময় ব্যবস্থা চালু ছিলো। যেমন, শস্যের বিনিময়ে পাওয়া যেতো বস্ত্র। কখনো কখনো মূল্যের একক হিসেবে ব্যবহৃত হতো গরু। এ কারণে এ যুগকে বিনিময় প্রথার যুগ বলা হয়।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
অনেক জায়গাতে বানানের ভুল রয়েছে। সংশোধন আবশ্যক।
ReplyDelete