বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎসব।

উৎসব আনন্দ প্রকাশের একটি বড় মাধ্যমউৎসব পারিবারিক ও সামাজিক উভয়ই হতে পারে।
সমগ্র দুনিয়াতেই মানুষ বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালন করে থাকে। এসব উৎসবের মধ্যে পারিবারিক ঐতিহ্যের ছাপ,সমাজ ও জাতীয়তার ছাপ,ধর্মের ছাপ বা রাজনীতির ছাপ- এ সবই থাকে। সব উৎসবের মূলেই রয়েছে
অনাবিল আনন্দ লাভ। 


নবান্ন

নবান্ন বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ঐতিহ্যবাহী শস্য উৎসববাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্নতম।
‘নবান্ন’ শব্দের অর্থ ‘নতুন অন্ন’। নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে তৈরি চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। নতুন চালের তৈরি খাদ্যসামগ্রী কাককে নিবেদন করা নবান্নের একটি বিশেষ লৌকিক প্রথা। হিন্দু রীতিতে নবান্ন অনুষ্ঠানে নতুন অন্ন পিতৃপুরুয়, দেবতা ও কাককে উৎসর্গ করে তারপর আত্তিয়-স্বজনকে পরিবেশন করে গৃহকর্তা ও পরিবারবর্গ নতুন গুড়সহ নতুন অন্ন গ্রহণ করেন।



বসন্ত উৎসব

আমদের দেশে ছয়টি ঋতুর মধ্যে বসন্ত সবচেয়ে রঙিন। তাই বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। ঋতুরাজ বসন্তকে নানা আয়োজনে বরণ করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায়ই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলার অনুষ্ঠান সবচেয়ে জাকজমকপূর্ণ হয়। এ দিন মহিলারা হলুদ বা বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে থাকেন। 


বৈশাখী মেলা

বৈশাখী মেলা বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে হয়ে থাকে। নববর্ষকে উৎসবমুখর করে তুলতেই এ মেলার আয়োজন করা হয়। বৈশাখী মেলা বাংলার গ্রামীণ জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জরিত। এখন কেবল গ্রামেই নয় শহরগুলোতেও এ মেলা হয়ে থাকে অত্যন্ত জাঁকজমকভাবেই। এ মেলাই দেশি-বিদেশি পণ্যের পাশাপাশি লোকজ খাদ্যদ্রব্য (চিড়া,মুড়ি,খই,কদমা)পাওয়া যায়। এ মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘নাগরদোলা’। শিশু,কিশোর,বৃদ্ধ সকলেই নাগরদোলায় চড়ে আনন্দ উপভোগ করে।



অমর একুশে গ্রন্থমেলা

অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে বাংলা একাডেমীর বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য ২০১৪ সাল থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় করে রাখতেই এই বইমেলার নামকরণ করা হয়েছে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। যতদূর জানা যায় ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা চিওরঞ্জন সাহা বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপওন করেন।১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি একাই বইমেলা চালিয়ে যান। ১৯৭৬ সালে অন্যান্য প্রকাশকরা অনুপ্রাণিত হন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমীর তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকি বাংলা একাডেমীকে মেলার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত করেন। ১৯৭৯ সালে মেলার সাথে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। ১৯৮৩ সালে একাডেমীতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। 



উপজাতীয় সাংস্কৃতিক উৎসব

বাংলাদেশের সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চলে নানা শ্রেণির উপজাতি বাস করে। প্রায় প্রত্যেক উপজাতিরই রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতি। তারা বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় ও নানা ধরণের সাংস্কৃতিক উৎসব পালন করে থাকে। ধর্মীয় উৎসবই হোক আর সামাজিক উৎসবই হোক নাচ ছাড়া যেন উপজাতিদের কোনো উৎসবই পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে না।  

নাইমুল ইসলাম

পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube

No comments

পোস্টটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন । আপনাদের কোন সমস্যাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু সম্ভব সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো ।

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.