ক্যালডীয় সভ্যতার ইতিহাস।
অ্যাসিরীয় সভ্যতার পতনের পর এর বিভিন্ন অংশ পাঁচটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে মিশে যায়। এই রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে মিডিয়া, পারস্য, ক্যালডিয়া, মিশর ও লিডিয়া। এ সময় ক্যলডিয়ার শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং সুযোগ মতো এরা ব্যাবিলন শহরকে কেন্দ্র করে মেসোপটেমিয়ান প্রভুত্ব বিস্তার করে। ক্যালডীয় সভ্যতাটি গড়ে উঠেছিলো ব্যাবিলন শহরকে কেন্দ্র করে। তাই এটি নব্য ব্যাবিলনীয় সভত্যা নামেও পরিচিত। ক্যালডীয় সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন সম্রাট নেবুচাদনেজার। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৬০৫ থেকে ৫৬২ অব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। রাজা হাম্মুরাবির রাজত্বকালের পর থেকে প্রায় ১,০০০ বছরব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহ আর হানাহানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলো মেসোপটেমিয়া। সম্রাট নেবুচাদনেজারের হাতে ব্যাবিলন পুনরায় শক্তিশালী হয়। নেবুচাদনেজার ছিলেন একজন কঠোর শাসক। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৬ অব্দে তাঁর শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় তিনি জেরুজালেম নগরী ধ্বংস করে দেন এবং ইহুদি অধিবাসীদের ব্যাবিলনে বন্দী করে রাখেন। ইতিহাসে এর নাম 'ব্যাবিলনীয় বন্দীদশা' হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। তিনি সিরিয়া দখল করে রাখা মিশরীয়দের তাড়িয়ে দেন। ক্যালডীয় সভ্যতার পতন ঘটে পারস্য আক্রমনের ফলে। খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৮ অব্দে পারস্য সম্রাট সাইরাস ক্যালিডীয়দের প্রভু হয়ে বসেন।
ধর্ম
ক্যালডীয়রা বহু দেবতার বিশ্বাসী ছিলো। তারা আকাশের বিভিন্ন গ্রহকে দেবতা মনে করতো। বৃহস্পতি ছিলো এদের প্রধান দেবতা। এর নাম দেয়া হয়েছিলো 'মারডুক"। ক্যালডীয়রা ভাগ্যের ওপর বিশ্বাসী ছিলো। তারা ব্যাবিলন শহরে বেশ কিছু মন্দির গড়ে তুলেছিলো।
সভ্যতার অবদান
ক্যালডীয় সভ্যতায় সম্রাট নেবুচাদনেজারের সময় ব্যাবিলন শহরের ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটে। এ সময় পুরো শহর ঘিরে ৫৬ মাইল লম্বা দেয়াল তৈরি করা হয়েছিলো। দেয়ালটি এতোই চওড়া ছিলো যে, এর ওপর দিয়ে চারটি রথ চলতে পারতো। শহরের মাঝখানে ছিলো বিশাল একটি তোরণ। এদের দেবী ইশতারের নামে তোরণটির নাম রাখা হয়েছিলো 'ইশতার তোরণ'। নেবুচাদনেজারের স্ত্রী বাগান করতে গিয়ে খুব পছন্দ করতেন। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার নির্দেশস্বরূপ নেবুচাদনেজার আশ্চর্য সুন্দর এক উদ্যান তৈরি করেছিলেন, যা ইতিহাসে 'ব্যাবিলনের শূন্যোদান' নামে খ্যাত।
বিজ্ঞানে অবদান
বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ক্যালডীয়দের খুব একটা অবদান ছিলো না। তবে তারা জ্যোতির্বিদ্যায় বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছিলো। ধর্মীয় কারণেই তারা গ্রহ-নক্ষত্র নিয়ে অনেক গবেষণা করেছিলো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১২টি নক্ষত্রপুঞ্জের সন্ধান পেয়েছিলো এবং তা থেকে ১২টি রাশিচক্রের সৃষ্টি হয়। ক্যালডীয়রাই সর্বপ্রথম সপ্তাহকে ৭ দিয়ে বিভক্ত করেছিলো। আবার প্রতি দিনকে ১২ জোড়া ঘণ্টায় ভাগ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলো।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
khub valo
ReplyDelete