ঘড়ি আবিষ্কারের সম্পূর্ণ ইতিহাস। কীভাবে তৈরি হলো আজকের ঘড়ি ?
প্রাচীনকালে ক’টা বাজে টা বলার কোনো উপায় ছিলো না। কারণ সে সময় ঘড়ি আবিষ্কার হয়নি। সময় দেখার ব্যাপারটা নির্ভর করতো সূর্যের অবস্থানের ওপর। সূর্য মাথার ওপর থাকলে হতো দুপির, আর মাটির কাছাকাছি থাকলে হতো সকাল বা বিকেল। সময়ের এ হিসেব চলেছে বহুকাল। তারপর খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দে প্রথম সময় দেখা শুরু হলো। প্রথমে সূর্যঘড়ি, তারপর পানিঘড়ি তারও বহু পরে তৈরি হল আজকের যুগের ঘড়ি।
সূর্যঘড়ি (Sundial )
খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে মিসর ও ব্যাবিলনে সূর্যঘড়ির উদ্ভব ঘটে। তখন উঠানের মাঝখানে একটা লাঠি পুঁতে তাকে কেন্দ্র করে একটি বৃত্ত এঁকে তাকে সমান কয়েকটি অংশে ভাগ করা হতো। যে খণ্ডে লাঠির ছায়া পড়তো সেই খণ্ডই হতো সেই দিনের প্রহর। তখন আট প্রহরে ছিল একদিন। তারপর তৈরি হল দাগকাটা চাকতি। চাকতির মধ্যে একটি লাঠির মতো দণ্ড থাকতো। সূর্যের আলোতে রাখলে ওই দণ্ডের ছায়া পড়তো চাকতির ওপর। ছায়া যে দাগে পড়তো তখন সেটিই বাজতো। একে বলা হতো সূর্যঘড়ি। সূর্যঘড়ির প্রধান সমস্যা ছিল যে, এটি দিয়ে কেবল দিনের সময় বলা যেতো। সূর্য না উথলে টা ও বলা যেতো না। বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টেও এই ঘড়ির কথা উল্লেখ আছে। সেখানে এই ঘড়ির নাম ছিল ‘ডায়াল অব আহাজ’। কারণ তখন ইংরেজি clock শব্দটির উদ্ভব হয়নি। মাত্র ৭০০ বছর আগে ল্যাটিন শব্দ ক্লক্কা থেকে ক্লক শব্দ এসেছে। ক্লক্কা শব্দটির অর্থ হলো ঘড়ি।
পানিঘড়ি ( Water Clock )
পানিঘড়ি তৈরি হয় একটি পানিপূর্ণ পাত্র দিয়ে। পাত্রের ছিদ্র দিয়ে পানি বের হতে দেয়া হয় এবং পাত্রের ভেতরের গায়ে চিহ্নিত দাগ থেকে বোঝা যায় পানি কতটুকু কমেছে। পানির স্তরের মাধ্যমে সময় নির্ধারিত হয়। সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ অব্দে ব্যাবিলন ও মিশরে পানিঘড়ি উদ্ভব হয়। তবে কিছু লেখক দাবি করেন, পানিঘড়ির উদ্ভব হয় সর্বপ্রথম চীনে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে।
পেন্ডুলামচালিত ঘড়ি (Pendulum Clock )
জার্মানির পিটার হেনলেইন ১৫১১ সালে প্রথম স্প্রিংচালিত ঘড়ি আবিষ্কার করেন। তবে সেটি নিখুদ সময় দিতে পারতো না। এর নির্দেশকের গতিও ছিল বিক্ষিপ্ত। ১৫৮৪ সালে সুইটজারল্যান্ড জোস্ত বার্গি তৈরি করেন আরেকটি যান্ত্রিক ঘড়ি। তাতেও সমস্যা ছিল বেশ বার্গি মূলত জ্যতিবিজ্ঞানকে মাথায় রেখেই ওটা তৈরি করেছিলেন। তাছাড়া মিনিতের কাটা ছাড়া আর কোনো কাটা ছিলো না তাতে। ১৬৬৫ সালে পেন্দুলামচালিত প্রথম কার্যকর ঘড়ি আবিষ্কার করেন নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান হাইজেন্স।
হাতঘড়ি (Wrist Watch )
বিশ্বের প্রথম ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়েছিলো আজ থেকে প্রায় ১,৩০০ বছর আগে। বিশালাকৃতির সেই ঘড়িকে ছোট করতে করতে হাতের কব্জিতে নিয়ে আস্তে সময় লেগেছে প্রায় ৮০০ বছর। আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে সর্বপ্রথম হাতঘড়ি তৈরি সম্ভব হয়। তবে ঠিক কোথায়, কে হাত ঘড়ি তৈরি করেছেন তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় ফ্রান্সের বয়েস, জার্মানির নুরেমবার্গ কিংবা ইতালিতে তৈরি হয়েছিল বিশ্বের প্রথম হাত ঘড়ি।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
Not upto the mark.
ReplyDelete