বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থানসমুহ !
ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের জীবনযাপনের রীতিনীতি, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শৈল্পিক নিদর্শন, সবকিছুই সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। আমরা এর গর্বিত উত্তরাধিকারী।
ষাট গম্বুজ মসজিদ ( Sixty Domed Mosque ):
বাংলাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ মসজিদ হলো ষাট গম্বুজ মসজিদ। এটি বাগের হাট জেলায় অবস্থিত। পঞ্চদশ শতকে খান জাহান আলী এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের উপর ৭৭টি এবং চার কোণায় ৪টি মোট ৮১টি গম্বুজ আছে। মোট ৮১টি গম্বুজ থাকলেও এটি ষাট গম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত। কেউ কেউ মনে করেন মসজিদের ভিতর ৬০টি খাম্বা বা স্তম্ভ থেকে ষাট গম্বুজ নাম এসেছে। ১৬০ ফুট দীর্ঘ এবং ১০৮ ফুট প্রস্থের এ মসজিদটি বাংলাদেশের ৩টি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের মধ্যে একটি। ইউনেস্কো ১৯৮৩ সালে ষাট গম্বুজ মসজিদটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত করে।
কান্তজি মন্দির ( Kantaji Mandir ):
কান্তজি মন্দির বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। এটি নবরত্ন মন্দির নামেও পরিচিত, কারণ ৩ তলাবিশিষ্ট এ মন্দিরের ৯টি চূড়া বা রত্ন ছিলো। দিনাজপুর শহর থেকে ১২ মাইল দূরে টেপা নদীর তীরে কান্তনগরে মন্দিরটি অবস্থিত। দিনাজপুর রাজবংশের রাজা প্রাণনাথ রায় ১৭২২ সালে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু তিনি মন্দিরের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫২ সালে তা শেষ করেন তাঁর পুত্র রামনাথ রায়। মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির ফলকে উৎকীর্ণ হয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পুরাণের কাহিনী। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০ টেরাকোটা তালি রয়েছে।
শালবন বিহার ( Salban Vihara ):
কুমিল্লা জেলার ময়নামতির কোটবাড়িস্থ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সন্নিকটে অবস্থিত শালবন বিহারটি ৭ম দশকে নির্মিত। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার হিসেবে এটি খুবই পরিচিত। এর আয়তন ১৬৭ বর্গ মিটার। এতে মোট ১৫৫টি কক্ষ রয়েছে। এ বিহারের মুল প্রবেশ পথ মাত্র ১টি। শালবন বিহারের বিশালায়তন দেয়ালগুলো ইট দ্বারা নির্মিত। পেছনের দেয়াল সবচেয়ে পুরু ও বিশালাকৃতির। এই দেয়ালটি প্রায় ৫ মিটার পুরু।
সোমপুর মহাবিহার ( Somapura Mahavihara ):
সোমপুরমহাবিহার বা পাহাড়পুর বিহারটি নওগাঁর বাদলগাছি থানায় অবস্থিত। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতাব্দীর শেষের বা নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে এটি নির্মাণ করেন। বিহারটির কেন্দ্রীও মন্দিরের চূড়ায় উচ্চতা প্রায় ৮০ ফুট। পাহাড়পুর বিহারের আয়তন প্রায় ৯২২ * ৯১৯ ফুট। এর চার দিকের প্রাচীর প্রায় ১৬ ফুট চওড়া। এই বিহারের মোট কক্ষের সংখ্যা ১৭৭টি। কেন্দ্রীয় মন্দিরটি দৈর্ঘে ৩৬৫.৬ ফুট ও প্রস্থে ৩১৪.৩ ফুট। এর আকার অনেকটা স্ক্রুশের মতো।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
No comments
পোস্টটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন । আপনাদের কোন সমস্যাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু সম্ভব সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো ।