বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থান।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের এই পৃথিবী। সুউচ্চ পর্বত থেকে শুরু করে সাগর-মহাসাগর, নয়নাভিরাম দ্বীপ, বালিময় মরুভূমি- কী নেই আমাদের এই পৃথিবীতে। সুন্দর এই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষের তৈরি বহু স্থাপনা রয়েছে, যেগুলো কেবল দেখতেই সুন্দর আর আশ্চর্যজনক নয়, ঐতিহ্যগতভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এরকমই কিছু সুন্দর যায়গা দেখে আশি-

পাথর বন ( Stone Forest ):
প্রকৃতির অপার বিস্ময় স্টোন ফরেস্ট বা পাথর বন চীনের উইনার প্রদেশের কুনমিং শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে শিলিনে অবস্থিত। স্টোন ফরেস্টের চার দিকে রয়েছে চুনাপাথরের অভূতপূর্ব সব কারুকাজ। ছোট-বড়, উঁচু-নিচু, বিচিত্র সব পাথর এমন ভাবে ছরিয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, যেন এক পাথরের বন, সে বনে সবুজ গাছের পরিবর্তে রয়েছে বিশাল সব চুনাপাথরের গাছ। স্টোন ফরেস্টের আজকের এ পর্যায়ে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় ২৭০ মিলিয়ন বছর। শত শত বছর ধরে সাগরের নিচে জমা হচ্ছিলো চুনাপাথর। কোনো এক সময় হয়ত এখানে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল, কিংবা রহস্যময় কোনো এক কারণে, এখানে ভউগলিক পরিবর্তন ঘটে। এতে সাগরের পানি শুকিয়ে গিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে লক্ষ্য লক্ষ্য বছরের পূরানো বৈচিত্র্যময় চুনাপাথরের স্থান। অদ্ভুত এ স্টোন ফরেস্টটি ২০০৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত হয়।

লেশান জায়ান্ট বুদ্ধ ( Leshan Giant Buddha ):  
লেশান জায়ান্ট বুদ্ধ পৃথিবীর বৃহত্তম এবং উঁচু বুদ্ধমূর্তি। এটি তৈরি করা হয়েছে উঁচু পাথরের পাহাড় কেটে, বিশাল জলরাশির প্রায় মাঝখানে। চীনের সিচুয়ান প্রদেশে অবস্থিত এ মূর্তিটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ৭১৩ সালে। বুদ্ধমূর্তিটির উচ্চতা ২৩৩ ফুট এবং এর কাঁধ ২৮ মিটার প্রশস্থ। এর মাথাটি ১৪.৭ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার প্রস্থ। স্থানীয়ভাবে বলা হয় ‘বুদ্ধই যেন পাহাড়, আর পাহাড়টাই যেন বুদ্ধ’। ১৯৯৬ সালে এটি উইনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত হয়।

স্ট্যাচু অব লিবার্টি ( Statue Of Liberty ):

স্ট্যাচু অব লিবার্টি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের লিবার্টি দ্বীপে হাডসন নদীর মুখে অবস্থিত একটি বিশালাকার তামার মূর্তি। এ মূর্তিটি ১৯৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর ফ্রান্স যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার শতবর্ষপূর্তিটে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ফ্রান্সের বন্ধুতের নিদর্শন হিসেবে উপহার দিয়েছিলো। এ মূর্তিটির নকশা করেছিলেন ফ্রান্সের ফ্রেডেরিক অগাস্ট বারথলডি। মূল মূর্তিটির উচ্চতা ১৫১ ফুট ১ ইঞ্চি।, আর ভূমি থেকে মশাল পর্যন্ত এর উচ্চতা ৩০৫ ফুট ১ ইঞ্চি। ১৯৮৪ সালে ইউনেস্কো এ মূর্তিটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত করে।

কিঝি (Kizhi ):
রাশিয়ার ওনেগা হৃদে অবস্থিত কিঝি দ্বিপটি কাঠের তৈরি বিভিন্ন স্থাপনার জন্য বিখ্যাত। এ দ্বীপের কাঠের স্থাপনাগুলো তৈরি করা হয়েছে কোনো প্রকার পেরেক, গজাল কিংবা ধাতব পদার্থ ব্যবহার না করেই। কিঝি দ্বীপটির দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার আর প্রস্থ ০.৫ কিলোমিটার। গোটা কিঝি দ্বিপটিই একটা জাদুঘর, সেখানে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক কাঠের গুঁড়ির তৈরি স্থাপনা। দ্বীপে ২২ গম্বুজে ট্রান্সফিগারেশন গির্জা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে ১৯১৪ সালে। এর কাঠের তৈরি পর্দায় রয়েছে সোনার পাত। এর উচ্চতা প্রায় ৩৭ মিটার। এটি বিশ্বের কাঠের গুঁড়ির তৈরি উচ্চতম স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিঝি ১৯৯০ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত হয়।  


নাইমুল ইসলাম

পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube

No comments

পোস্টটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন । আপনাদের কোন সমস্যাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু সম্ভব সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো ।

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.