নক্ষত্রের বয়স কত ?
রাতের মেঘমুক্ত আকাশে আমরা অসংখ্য আলোকবিন্দু মিটমিট করে জ্বলতে দেখি। এগুলোকেই বলা হয় নক্ষত্র বা তারা। খালি চখে আমরা মাত্র কয়েক হাজার নক্ষত্র দেখতে পাই। পৃথিবী থেকে শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা ১০০ কোটিরও বেশি নক্ষত্রের সন্ধান পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে নক্ষত্র হল বিশালাকৃতির জ্বলন্ত গ্যাসের গোলাকার পিণ্ড। এগুলো জ্বলজ্বল করে, কারণ এগুলো আগুনে পুড়ছে।
নামের উৎপত্তিঃ নক্ষত্রের ইংরেজি Star শব্দটি গ্রিক ‘অ্যাস্টার’ থেকে এসেছে, যা আবার হিট্রিয় ভাষার শব্দ শিত্তার থেকে এসেছে। শিত্তার শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত শব্দ সিতারা থেকে।
নক্ষত্রের আকারঃ
আমাদের সূর্য একটি গড় মাপের নক্ষত্র। রেড জায়ান্ট (লাল দানব) নামক নক্ষত্র সূর্যের চেয়ে ২০ থেকে ১০০ গুন বড়। বেটেলগুস-এর মতো অতি বৃহৎ আকারের কিছু নক্ষত্র আছে, যেগুলো সূর্যের চেয়ে ৫০০ গুন বড় এবং এদের পরিধি ৭০০ মিলিয়ন কিলোমিটার। ক্ষুদ্রাকৃতির নক্ষত্রও রয়েছে মহাবিশ্বে। যেমন- শ্বেত বামন নক্ষত্র আমাদের পৃথিবী থেকে ছোট এবং নিউট্রন নক্ষত্রগুলোর পরিধি মাত্র ১৫ কিলোমিটার।
নক্ষত্রের গঠনঃ আধিকাংশ নক্ষত্রই প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত। ধ্বংসে পড়েছে এমন একটি মেঘের মাধ্যমর নক্ষত্রের জীবনচক্র শুরু হয়। এই মেঘের মধ্যে থাকে মূলত হাইড্রোজেন। অবশ্য হিলিয়ামসহ অতি সামান্য বিরল ভারী মৌল থাকতে পারে। নক্ষত্রের কেন্দ্রটি যখন যথেষ্ট ঘন হয় তখন সেই কেন্দ্রের হাইড্রোজেন নিউক্লিয়চ সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হিলিয়ামে পরিণত হতে থাকে। নক্ষত্রের অভ্যন্তরভাগের আবশেষ থেকে শক্তি বিকিরণ এবং পরিচলনের এক মিশ্র প্রক্রিয়ায় বহির্ভাগে নীত হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো নক্ষত্রকে ধ্বসে পড়তে দেয় না এবং উৎপন্ন শক্তি একটি নাক্ষত্রিক বায়ু তৈরি করে, যা বিকিরণকে মহাকাশে ছড়িয়ে দেয়।
নক্ষত্রের বয়সঃ অধিকাংশ নক্ষত্রের বয়স ১ থেকে ১০ বিলিয়ন বছর। তবে কিছু নক্ষত্রের বয়স ১৩.৮ বিলিয়ন বছর। এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বেশি বয়সী নক্ষত্রটি হোল HD140283 যার (ডাক নাম মিথুসেলাহ)। এ নক্ষত্রটির বয়স আনুমানিক ১৪.৪ বিলিয়ন বছর। যতো ভারী নক্ষত্র, তার জীবনকালও ততো সংক্ষিপ্ত। কারণ অত্যন্ত ভারী নক্ষত্রের কেন্দ্রস্থলে চাপ বেশি থাকে এবং সেই চাপের সমতার জন্য সেগুলো অতি দ্রুত হাইড্রোজেন পরাতে থাকে। এক সময় জ্বালানি নিঃশেষ হয়ে যায় এবং সাদা বামনে পরিণত হয়। অত্যন্ত ভারী নক্ষত্র গড়ে কয়েক মিলিয়ন বছর টিকে থাকে। কম ভরসম্পন্ন নক্ষত্র (যেমন, লাল বামন) তাদের জ্বালানি খুব ধীরে পোড়ায় এবং ১০ থেকে ১০০ বিলিয়ন বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
No comments
পোস্টটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন । আপনাদের কোন সমস্যাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু সম্ভব সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো ।