টি ২০ ক্রিকেট কিভাবে এলো? টি ২০ ক্রিকেটের ইতিহাস।
ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট সংস্করণ হল টি ২০ ক্রিকেট।বর্তমান বিনোদনের অপর নাম টি ২০ ক্রিকেট।এ খেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রিকেট খেলাকে আরো বেশী প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা। পাশাপাশি মাঠে দর্শকদেরকে কাছে টেনে আনা কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় দর্শকদেরকে নির্মল আনন্দ উপহার দেয়া। বর্তমানে এ ধরনের ক্রিকেট খেলা বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আইপিএল,বিপিএল, পিসিএল ও কাউন্টি ক্রিকেট গুলো টি ২০ ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
আসুন জেনে নেই টি ২০ ক্রিকেটের ইতিহাস-
টি ২০ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডে আন্তঃকাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।এরপর ২০০৫ সালে প্রথম টি ২০ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। সেই ম্যাচে পরচুলা, নকল গোঁফ আর পুরনো আমলের বেশভুষায় মাঠে নামেন অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা! ম্যাকগ্রা করেন আন্ডারআর্ম বল, তো আম্পায়ার বিলি বাউডেনও কম যায়না। পকেট থেকে লাল কার্ড বের করে দেখিয়ে দিলেন অজি বলারকে। অনেক নাটকীয়তা আর রঙ্গরসে ভরা সেই ম্যাচে কি হয়নি? গল্পটা সিনেমার মত হলেও এভাবেই বরন করা হয়েছিল ক্রিকেটের নবীন সদস্যকে ।
সেই ম্যাচের পর থেকেই এই ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এত বেড়ে গিয়েছিলো যে আইসিসি এর দুবছর পরেই টি ২০ ক্রিকেটের প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজন করে ২০০৭ সালে। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে সে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সে আসরের অন্যতম চমক ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়া। সুপার এইটে কোন জয় পায় নি বাংলাদেশ।
পরের আসর দুই বছর পর ২০০৯ সালে বসে ক্রিকেটের তীর্থভূমি ইংল্যান্ডে। আগের বার ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে গেলেও সেবার শিরোপা হাতছাড়া করে নি পাকিস্তান। সে আসরে গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে সুপার এইটের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের।
পরের আসর বসে ঠিক এক বছর পর ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দ্বৈরথে জয় পায় ইংল্যান্ড। তখনকার সময় ওয়ানডে ফরম্যাটের বিশ্বকাপে চারটি ট্রফি জিতলেও টি২০ বিশ্বকাপ জেতা হয় নি অজিদের। ২০১০ সালের টি২০ বিশ্বকাপেও জয়হীন থাকতে হয় বাংলাদেশকে। আবারও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়।
২০১২ টি২০ বিশ্বকাপের আসর বসে শ্রীলঙ্কায়। প্রথমবারের মত টি২০ বিশ্বকাপ এশিয়ার মাটিতে বসে। টুর্নামেন্টে সুপার এইট পর্বে ছিলো ২ টি সুপার ওভারের নাটক। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই ফাইনালিস্ট দলই সুপার ওভার খেলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু একটিতেও জিতলো না কিউইরা। স্বাগতিক হয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ফাইনালের তুমুল লড়াইয়ে ক্যারিবীয়দের কাছে হারতে হয় সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনের দলকে। মজার বিষয় হলো, গ্রুপ পর্বে একটি ম্যাচও জিতে নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ! অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টির কারনে পরিত্যক্ত হলে নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে সুপার এইটে উঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে আসরেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে।
টি২০ বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর বসে বাংলার মাটিতে। ২০১৪ সালের আসরে এবার ভিন্নভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে আইসিসি। বাছাই-পর্ব থেকে উতরে আসা ছয়টি সহযোগী দেশ টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে র্যাংকিংয়ে নিচের দুই দলের সাথে খেলে। আটটি দল আলাদা দুই গ্রুপে লড়াই করে। এই পর্বের নাম ‘কোয়ালিফায়ার’। আফগানিস্তান ও নেপালের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পর হংকংয়ের কাছে হারলেও সুপার টেনে উঠে বাংলাদেশ। কোয়ালিফায়ারের অন্য গ্রুপে নেদারল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডের এক অসাধারন ম্যাচ দেখেছিলো ক্রিকেটবিশ্ব। সুপার টেনে জয়হীন থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু আরেক গ্রুপ থেকে আসা নেদারল্যান্ড ঠিকই ইংল্যান্ডকে হারায়। ২০০৯ ও ২০১২ সালে ফাইনালে কাঁদতে হয়েছিলো শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু এবার ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলংকা।
টি২০ বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসর বসে ভারতে ২০১৬ সালে।ফাইনালে উঠেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।শেষ ওভারে ব্রেথওয়েট এর দানবীয় ব্যাটিং এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টি২০ বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর বসবে অস্ট্রেলিয়ায় ২০২০ সালে।যেখানে নতুন রেকর্ড, নতুন নাটকীয়তা ও নতুন চ্যাম্পিয়ন অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।
পোস্টটি লিখেছেন
আমি জয়। আমি এই ব্লগের এডমিন। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের স্থাপত্য বিভাগের একজন ছাত্র। আমি খুলনা থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছি। আমি ব্লগ লিখি এবং আমি একজন ইউটিউবার। এর পাশাপাশি আমি গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করি। ঘুরে বেড়ানো এবং সিনেমা দেখা আমি খুব পছন্দ করি।
Follow her @ Twitter | Facebook | YouTube
ভাইয়া টি টোয়েন্টি ক্রিকেট আবিষ্কার করেন কে?আমাকে এই নাম্বারে জানান plz01881046966
ReplyDelete